উঠতি মডেল সাদিয়া ইসলাম নাজের ঝুলন্ত লাশ তার রাজধানীর ভাটারা এলাকার বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়। ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ভাটারা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। পরদিন রাতে তার লাশ দাফন করা হয়।
ভাটারা থানাধীন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার জি-ব্লকের ২১ নম্বর রোডের ৭৯২ নম্বর বাসার দ্বিতীয় তলায় একটি ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন মডেল সাদিয়া।
তার বাবা-মায়ের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। সাদিয়ারা দুই ভাইবোন। তাদের বাবা আরেকটি বিয়ে করে খুলনায় বসবাস করতেন। পুলিশ বলছে, মডেল সাদিয়া আত্মহত্যা করেছেন।
পুলিশ জানায়, ১৮ জানুয়ারি রাত ৩টার পর জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ভাটারা থানায় একটি ফোন আসে।
মনিরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি জানান, রাত ১১টা থেকে তার মেয়েকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না।
ভাটারা থানার ওসি মো. মুক্তারুজ্জান জানান, সাদিয়া বসুন্ধরার বাসায় একাই থাকতেন।
বাবা-মেয়ের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল, এ কারণে একা থাকতেন সাদিয়া। ঘটনা শুনে পুলিশ দ্রুত সাদিয়ার বাসায় যায়।
সেখানে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে রাত পৌনে ৪টায় ঘরের তালা ভাঙে তারা।
ঢুকে সিলিংফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে সাদিয়ার লাশ।
সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়।
এ ঘটনায় করা মামলায় বলা হয়, ১৮ জানুয়ারি সন্ধ্যায় পারিবারিক বিষয় নিয়ে সাদিয়ার সঙ্গে তার বাবার কথা কাটাকাটি হয়।
অভিমান ভাঙাতে রাত ১১টা পর্যন্ত মেয়ের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে কথা বলেন মনিরুল ইসলাম। একপর্যায়ে বাবার ফোন কেটে দেন সাদিয়া।
পারিবারিক কিছু বিষয় মেয়েকে বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন মনিরুল। মেয়ে নিজ সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন।
কিছুটা জেদ চেপে গিয়েছিল তার। মনিরুল বিষয়টি বুঝতে পেরে মেয়ের রাগ ভাঙানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু সাদিয়া কিছুতেই স্বাভাবিক হচ্ছিল না।
একপর্যায়ে সাদিয়া মনিরুলের ফোন না ধরলে তিনি বাসার কেয়ারটেকারদের মাধ্যমে জানতে পারেন, সাদিয়ার রুমের দরজায় তালা দেওয়া।
তখন তিনি জরুরি ফোনকল সেবার মাধ্যমে পুলিশের সহযোগিতা নেন।
সাদিয়ার সহকর্মী মডেল বারিশা হক জানান, করোনার কারণে বিপাকে পড়েন উঠতি মডেল সাদিয়া। কয়েক মাস তার কোনো কাজ ছিল না।
তার মা-বাবার বিচ্ছেদের কারণে সে কিছুটা ভেঙে পড়েছিল। সব মিলিয়ে সাদিয়া হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন।
এ কারণে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তিনি।
জানা গেছে, তিন বছর আগে মডেলিং শুরু করেন সাদিয়া। নিয়মিত টিকটক ভিডিও বানাতেন তিনি।